আন্দোলেনের নামে রাজধানী অবরোধ করলে বিএনপির অবস্থা শাপলা চত্বরের চেয়েও করুণ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আমরাও প্রস্তুত আছি। ঢাকা অবরোধ করলে বিএনপিও অবরোধ হয়ে যাবে। এখন না হয় তারা চুরি করে ঢাকায় ঢুকেছে, এরপর তারা পালাবার পথ পাবে না। শাপলা চত্বরে কী হয়েছিল, মনে আছে? শেষ রাতে সবাই পালিয়ে গিয়েছিল। বিএনপির আরও করুণ পরিণতি হবে।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় যুবলীগ এ সমাবেশ আয়োজন করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা কি কেউ ঢাকা শহরের খবর রাখেন? ১৮ তারিখকে সামনে রেখে মির্জা ফখরুল ডিসেম্বরের মতো সারাদেশ থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঢাকা আনতে শুরু করেছেন। ঢাকার হোটেলগুলোর সব কক্ষ তারা বুকিং দিয়ে রেখেছেন। ঢাকা শহরে খালি যেসব ফ্ল্যাট রয়েছে, তাও তারা বুক করে ফেলেছেন। আবার ডিসেম্বর মাসের মতো সরকার পতনের স্বপ্ন দেখছেন মির্জা ফখরুল। তাদের এক দফা, ৩২ দল, ফখরুলের আন্দোলন, বিএনপির আন্দোলন, বিএনপির ১০ দফা- সবই ভুয়া। বিএনপিই হচ্ছে ভুয়া।
তিনি বলেন, বিএনপি ঢাকা শহরে লোক জমায়েত করে সচিবালয় থেকে শুরু করে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা অবরোধ করার ঘোষণা দিয়েছে। এতে তাদের জন্য ভালোই হয়েছে। টাকা-পয়সার নতুন চালান আসবে। মির্জা ফখরুল মাঝে মধ্যেই আজগুবি বার্তা ছড়াচ্ছেন। তার কাছ থেকে হাওয়া থেকে পাওয়া খবর পাওয়া যায়। টাকা দিয়ে তাদের ডিসেম্বরের আন্দোলন গোলাপবাগ গরুর হাটের গর্তে পড়ে গেছে। এখন আবার আন্দোলন! ফখরুল বলছেন, পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন নাকি বিএনপিকে আন্দোলনে সাহস যোগাচ্ছে। এই খবর ‘হাছা’ না ‘মিছা কথা’। মিথ্যা কথা আর কত বলবেন? পশ্চিমা বিশ্বের যাদের সঙ্গে দেশে ও দেশের বাইরে কথা বলেছেন, তারা আমাদের জানিয়েছেন যে, সামনের নির্বাচনে তারা কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন দিচ্ছেন না। ফখরুল এই খবর কোত্থেকে পেয়েছেন। ছাড় দেওয়া হবে না কোনো। ডিসেম্বরের চাইতেও কড়া খেলা হবে।
যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইনুদ্দিন রানা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি নেতা রিজভী অভিযোগ করেছেন যে, খালেদা জিয়াকে সরকার বিষ দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অথচ যে বাসায় খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হচ্ছে, সেটা তারই বাসা। তার চিকিৎসার নেতৃত্বে রয়েছেন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা এবং ড্যাবের সভাপতি ডা. জাহিদ। তাদের পরামর্শেই চিকিৎসা চলছে। এখন আমাদের সাবধান হতে হবে। কেননা খালেদা জিয়াকে বিষক্রিয়ার অভিযোগ এনে বিএনপি কোনো ছক কষছে কিনা। তারা নিজেরাই খালেদা জিয়াকে হত্যা করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় কিনা- এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
মির্জা আজম বলেন, দেশবিরোধী অপশক্তি বিএনপির নেতারা কাকে প্রধানমন্ত্রী বানাবেন, তা তারা নিজেরাও বুঝতে পারছেন না। খালেদা জিয়া তো মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। অন্যদিকে, তারেক জিয়া রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়ে আছেন। এই ধরনের মানুষরা নাকি দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। আজকে যারা বিএনপি করেন, তারা বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে কাজ করছেন।