মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় আব্দুল মালেক নামে এক প্রবাসী নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। একটি প্রাইভেট কারের সঙ্গে তাঁর মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হলে ১৫ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে জানিয়েছে তাঁর পরিবার। মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত আব্দুল মালেকের দোকানমালিক মৃত্যুর বিষয়টি তাঁর পরিবারকে নিশ্চিত করেছেন। নিহত আব্দুল মালেক ঝিনাইদহ শহরের ভুটিয়ারগাতী জোয়ারদারপাড়ায় ফয়েজ আহমেদের ছেলে। পরিবারে তাঁর স্ত্রীসহ তিন ছেলে—মেয়ে রয়েছে। নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে পরিবারের দারিদ্র্য কমানোর লক্ষ্যে প্রায় ছয় লাখ টাকা ব্যয়ে দালালের মাধ্যমে পানিপথে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান আব্দুল মালেক। এরপর সেখানে তিন বছর বিভিন্ন বাগানে থাকতেন। সে সময় মালয়েশিয়া সরকার পানিপথে যারা মালয়েশিয়া গিয়েছিল তাঁদের বেশ কিছু ব্যক্তিকে ভিসা দেন। তার মধ্যে আব্দুল মালেকও ছিলেন। পরে সেখানে নাঈম নামের প্রবাসী এক মুরগি ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরিচয় হলে তাঁর সঙ্গে মালয়েশিয়ার ইপু এলাকার কলাকাঞ্চা বাজারসংলগ্ন পাড়ায় থাকতেন এবং তাঁর মুরগির দোকানে কাজ করতেন মালেক। মালয়েশিয়ান ৫০ টাকা করে বেতন পেতেন। কয়েক বছর পরপরই ঝিনাইদহের বাড়িতে আসতেন। তাঁর পাঠানো টাকা দিয়েই চলত সংসার। নাঈমের বরাত দিয়ে নিহতের পরিবার জানায়, ১৪ আগস্ট স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ৭টায় দোকান বন্ধ করে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে ইপোকলাকাঞ্চা এলাকায় একটি প্রাইভেট কারের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। সে সময় গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে মালয়েশিয়ার টাইপিং নামের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দিবাগত রাত ৩টার দিকে আব্দুল মালেকের মৃত্যু হয়। আব্দুল মালেকের স্ত্রী নীলা খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাঁর (আব্দুল মালেকের) বস নাঈম মোবাইল ফোনে মৃত্যুর বিষয়টা জানিয়েছে। আমরা এখন অসহায় হয়ে গেলাম। আমাদের অভিভাবক আর কেউ থাকল না। সে ঋণ করে বিদেশ গিয়েছিল। তাঁর পাঠানো টাকা দিয়ে সংসার চালাতাম। এখন তাঁর লাশ বিদেশ থেকে আনার মতো সামর্থ্যও নাই। সরকারের কাছে দাবি জানাই, অন্তত আমার স্বামীর লাশটা যেন দেশে আনার ব্যবস্থা করে দেয়।’ নিহতের প্রতিবেশী শাহিদা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মালেক আমাদের ভাই হয়। সে খুব ভালো মানুষ ছিল। তাঁর মৃত্যুতে পরিবারটি অভিভাবকহীন হয়ে গেল।’