মাগুরার চাঞ্চল্যকর আজিজুর হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাব। গ্রেপ্তার করেছে হত্যাকারী হোমিও চিকিৎসক আশরাফ হোসেনকে। তিনি সদর উপজেলার মালিকগ্রামের আহম্মদ আলী বিশ্বাসের ছেলে। মাগুরা শহরের বেলতলায় তার হোমিওপ্যাথির ব্যবসা আছে। পাশাপাশি তিনি মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসা করেন। এই সূত্রে আজিজুরের সঙ্গে তার সম্পর্ক। আজিজুরের কাছে ব্যবসায়ীক ৩ হাজার টাকা পাওনা ছিল তার। কিন্তু আজিজুর সেটি ৫০০ টাকা বলে দাবি করে আসছিলেন। এর জের ধরেই গত ৫ জুন আজিজুরকে নিজ হোমিও দোকানে ডেকে এনে হত্যা করে আশরাফ হোসেন। পরে শরীর থেকে মাথা ও পা বিচ্ছিন্ন করে জগদলের একটি কালভার্টের নিচে ফেলে দেন। শরীরের বাকি অংশ বস্তাবন্দি করে নিহতের মামাবাড়ি মাগুরার মহম্মদপুরের কালুকান্দি এলাকার একটি পুকুরে ফেলে আত্মগোপনে যান আশরাফ। র্যাব খুলনার অধিনায়ক লে. কর্নেল রওশনুল ফিরোজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মহম্মদপুর উপজেলার কালুকান্দি গ্রামে নৃশংস হত্যাকা-ের শিকার আজিজুর রহমানের বিছিন্ন মাথা ও একটি পা গত সোমবার বিকালে মাগুরা সদরের জগদল এলাকার একটি কালভার্টের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়। লে. কর্নেল রওশনুল ফিরোজের নেতৃত্বে র্যাব-৬ এর একটি দল কালভার্টের নিচ থেকে পা উদ্ধার করে। পরে রাত ৮টার দিকে একই এলাকার পাটক্ষেত থেকে মাথা উদ্ধার করা হয়।
লে. কর্নেল রওশনুল ফিরোজ জানান, হত্যাকা-ের মূল আসামি আশরাফ হোসেনকে গত সোমবার দুপুরে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি এ বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেন। তার তথ্যে নিহত আজিজুরের প্রথমে পা ও পরে রাতে মাথা উদ্ধার করা হয়।
আজিজুর রহমান মাগুরা সদর উপজেলার সংকোচখালি গ্রামের মৃত মুজিবুর রহমানের ছেলে। ছোটবেলায় তার বাবা-মা মারা যান। তিনি মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের কালুকান্দি গ্রামে নানা আবুল কাশেমের বাড়িতে থেকে বড় হন। তিনি ঢাকার একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করতেন। গত ৫ জুন আজিজুর সকালে বাসা থেকে যশোরের উদ্দেশে রওনা হয়ে নিখোঁজ হয়। ৬ জুন সকালে কালুকান্দি গ্রামের মতিয়ার মোল্যার পুকুরে স্থানীয় লোকজন রক্তাক্ত একটি বস্তা দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বস্তাটি উদ্ধার করলে তার ভিতর মাথা ও একটি পা বিহীন লাশ পাওয়া যায়। পরে লাশের পোশাক দেখে এটি আজিজুর রহমানের বলে শনাক্ত করেন ছোট ভাই হাবিবুর রহমান। ওইদিন হাবিবুর রহমান মহম্মদপুর থানায় হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। পরে আসামি গ্রেপ্তারসহ বিচ্ছিন্ন মাথা ও পায়ের সন্ধানে নামে র্যাব। পাশাপাশি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে যশোরের শার্শা থেকে খুনি আশরাফকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি র্যাবের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে।