আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণ করতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ জানায় সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দল।
তবে চেষ্টার পরও ব্যর্থ হওয়ায় ডিসেম্বর নাগাদ রিজার্ভের শর্ত শিথিল করার আভাস দিয়েছে আইএমএফ।
বুধবার (১১ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর কাজী সায়েদুর রহমান, ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের, সাজেদুর রহমান খানসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে আইএমএফ প্রতিনিধি দল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্র জানায়, সফররত আন্তর্জাতিক অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তার যে-সব শর্ত দিয়েছিল, নভেম্বর মাসে দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে শর্তগুলো পর্যালোচনা করছে। সর্বশেষ বৈঠকে সংস্থাটি প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে রিজার্ভ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করেছে। রিজার্ভে প্রতিশ্রুত ডলার না থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রতিনিধি দল।
তবে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট, অভ্যন্তরীণ অবস্থা ইত্যাদি পর্যালোচনায় উঠে আসে। প্রতিশ্রুত রিজার্ভ সংরক্ষণে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। বিষয়টি সফররত প্রতিনিধি দলও দেখেছে। এ অবস্থায় রিজার্ভ সংরক্ষণে নমনীয় হওয়ার ইঙ্গিত দেয় সংস্থাটি। ২৫ বিলিয়ন ডলারের বর্তমান লক্ষ্যমাত্রা আগামী ডিসেম্বর ও মার্চের জন্য আরও কমতে পারে।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর না থাকায় ভারপ্রাপ্ত গভর্নর এ বিষয়ে মতামত জানাতে পারেননি।
সর্বশেষ রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক শূন্য ৭ বিলিয়ন ডলার। আর সেখান থেকে অন্যান্য দায়-দেনা বাদ দিলে রিজার্ভ ১৮ বিলিয়নের নিচে নেমে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক জানান, আইএমএফকে প্রতিশ্রুত রিজার্ভের চেয়ে ৪ বিলিয়ন ডলার কম আছে। জুলাইয়ের জন্য প্রতিশ্রুতি ছিল ২৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।
উল্লেখ্য, রিজার্ভ, বাজার ভিত্তিক ডলারে রেট, ঋণ খেলাপি, রাজস্ব সংস্কার, তারল্য ব্যবস্থাপনাসহ ৪৭টি শর্তে আইএমএফ বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ দেয়। বাংলাদেশ অধিকাংশ শর্ত পূরণ করতে পারলেও রিজার্ভে উন্নতি, কর-জিডিপি অনুপাত এবং বাজার ভিত্তিক ডলার রেট বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি। যে সব প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি, সেগুলো পূরণ করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ।