আধুনিক সভ্যতা ও প্রযুক্তির ছোঁয়ায় হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার হারানো ঐতিহ্যকে বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বিলুপ্তপ্রায় লাঠি খেলা। ঢাক-ঢোলের বাজনা আর গানের সুরের তালে তালে চলে লাঠিয়ালদের লাঠির কসরত। খেলায় প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা করে পাল্টা আঘাত করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন লাঠিয়ালরা। হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা দেখতে সেখানে ভীড় জমায় হাজরো দর্শক। এ আয়োজনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বয়ে যায় পুরো এলাকায়। এমন আয়োজন যেন প্রতি বছর হয় এমন দাবি জানিয়েছেন খেলা দেখতে আসা দর্শকরা।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত উপজেলার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় এ লাঠি খেলার। শৈলকুপা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. দিনার বিশ্বাসের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ধলহরাচন্দ্র ইউপি চেয়ারম্যান মো. মতিয়ার রহমান বিশ্বাস।
দর্শক রোজিনা খাতুন বলেন, ছোট সময়ে এমন খেলা প্রায়ই হতো। বিভিন্ন এলাকা এলাকা থেকে অনেকেই সে সময় খেলা দেখতে আসতো। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এসব খেলাধুলা হারিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন পর হলেও লাঠি খেলা দেখে অনেক ভালো লাগছে। আয়োজকদের তারা প্রতি বছর এ ধরণের খেলার আয়োজনের দাবি জানান।
উজ্জল হোসেন নামে একজন বলেন, লাঠি খেলা হচ্ছে গ্রাম বাংলার প্রাণের খেলা। কিন্তু আধুনিকতার নামে এসব খেলা দিনে দিনে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এ ধরণের খেলাধুলার বেশি বেশি আয়োজন করলে নতুন প্রজম্মের ছেলে-মেয়েরা উৎসাহিত হবে।
খেলোয়ার আজিদুল বলেন, আমাদের বাপ-দাদারা এসব খেলা খেলতো। তারা দেশের বিভিন্ন জায়গা গিয়ে লাঠি খেলা খেলেছে। কিন্তু সময় বদলের সাথে সাথে লাঠিয়ালদের কদরও কমে গেছে। এখন খেলা খুব একটা হয় না। মাঝেমধ্যে ডাক পড়লে মনে আনন্দ নিয়েই এই খেলা খেলি। এ খেলা বাঁচিয়ে রাখতে হলে বেশি বেশি খেলার আয়োজন করা দরকার।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মো. মতিয়ার রহমান বলেন, গ্রামীন খেলাধুলা কমে যাওয়ায় যুব সমাজ মাদকের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে। তাই যুব সমাজকে মাদকের পথ থেকে দূরে রাখতে এ ধরনের আয়োজন করা প্রয়োজন। গ্রামীন ঐতিহ্যকে ধরে রাখতেই প্রতি বছরই এ ধরেনর আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।