ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমরাবাড়িয়া ইউনিয়নের চল্লিশ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের টাকা শ্রমিকদের একাউন্ট বাদেই উত্তোলন করা হয়েছে। যেন যেন ভাবে কাজ করে টাকা ওই ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বর আমজাদ হোসেন শ্রমিকদের তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। এদিকে টাকা ভাগাভাগি নিয়ে কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ৭ মেম্বরদের মাঝে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। টাকার ভাগ না দিয়ে আমজাদ হোসেন মেম্বর এখন আড়ালে আবডালে চলাফেরা করছেন। টাকার ভাগ না দেওয়ায় নগরবাথান বাজারে তাকে আটকিয়ে একবার নাজেহালও করা হয়েছে বলে জানা গেছে। কুমরাবাড়িয়া ইউনিয়নের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইউপি মেম্বর অভিযোগ করে বলেন, কালীতলা থেকে ধোপাবিলা গ্রামের রাস্তার কাজের জন্য প্রায় আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। চল্লিশ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পে রাস্তাটি অর্ন্তভুক্ত ছিল। ৬ ইউপি মেম্বর মিলে আমজাদকে প্রকল্প সভাপতি করেন। কথা ছিল ৬০ হাজার টাকার মধ্যে প্রকল্পের যাবতীয় কাজ সারতে হবে। বাকী টাকার মধ্যে ইউনিয়নের সচিব, পিআইও অফিস ও ট্যাগ অফিসারের হিস্যা বুজিয়ে দিয়ে বাদ বাকী টাকা ৭ মেম্বরের মধ্যে ভাগ হবে। কিন্তু প্রকল্প সভাপতি আমজাদ হোসেন উক্ত টাকা হলিধানী কৃষি ব্যাংক থেকে একাই তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। ওই ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বর কলিম উদ্দীন জানান, কাজের হিসাব না দিয়ে আমজাদ হোসেন এখন তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখছেন না। তবে কিছু একটা ঘটেছে। শ্রমিকদের একাউন্ট ব্যাতিত কি ভাবে প্রকল্পের টাকা প্রকল্প সভাপতি উত্তোলন করলেন গনমাধ্যম কর্মীদের এমন প্রশ্নে জবাবে হলিধানী কৃষি ব্যাংকের ম্যানেজার ফারহানা বিলকিস জানান, আগে থেকেই এমন নিয়মে টাকা উঠে আসছে। বিয়টি আমি বুঝতে না পেরে দিয়ে দিয়েছি। খোঁজ খবর ও আইন না জেনে এমন ভাবে টাকা দেওয়া ঠিক হয়নি বলেও ম্যানেজার জানান। বিষয়টি নিয়ে কুমরাবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম জানান, সাংবাদিকদের কাছ থেকে আমি এমন তথ্য পেয়েছি। তবে ঘটনাটি সঠিক বলেই মনে হচ্ছে। তিনি বলেন কর্মসৃজন প্রকল্পের টাকা এভাবে উত্তোলন আইন বর্হিভুত। চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম জানান, আমজাদসহ কতিপয় মেম্বর এর আগে জেলা পরিষদের নির্বাচনে জনৈক সদস্যকে ভোট দিবে বলে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এ নিয়ে বহুবার সালিশ বৈঠক হয়েছে। মেম্বরদের নীতি বিরোধী কাজকর্মে ইউনিয়নের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলেও চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন। ঝিনাইদহ পিআইও অফিসের প্রকৌশলী হাসিবুর রহমান জানান, ইউনিয়নের সচিব, পিআইও অফিস ও ট্যাগ অফিসারের হিস্যা বলতে তারা কি বোঝাতে চেয়েছেন জানি না। তবে এই প্রকল্প থেকে কোন টাকা নেওয়া হয়নি। এটা শ্রমিকদের টাকা। জনৈক মেম্বর তার অপকর্ম ঢাকতে এমন কথা বলছে। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন শ্রমিকদের একাউন্ট ছাড়া ব্যাংক ম্যানেজার কি ভাবে সব টাকা দিয়ে দিলেন ? বিষয়টি নিয়ে কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের সচিব ইমারত হোসেন ও ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বর আমজাদ হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেন নি। উল্লেখ্য সারা জেলায় অতি দরিদ্রদের জন্য চল্লিশ দিনের প্রকল্পের টাকা নয়ছয় হলেও দায়ীদের বিরুদ্ধে কোন তদন্ত বা ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে।