ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসন্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে নৌকা ও বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) চেয়ারম্যান প্রার্থীর সর্মথকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের সময় নির্বাচনি অফিসে হামলা ও মটর সাইকেল ভাংচুর করা হয়। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় আহত হয়েছেন নারিকেল বাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই তহিদুজ্জামান। তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত ৭টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ফুরসুন্দি ইউনিয়নের টিকারি বাজার, লক্ষিপুর ও ফুরসুন্দি গ্রামে থেমে থেমে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ফলে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে। মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার। পুলিশ জানায় গতকাল রাত ৭টার দিকে নৌকা ও সতন্ত্র প্রার্থী সর্মকদের মধ্যে টিকারী ও ফুরসুন্দি এলাকায় সংঘর্ষ হয়। বিদ্রোহী প্রার্থী আবু সাঈদ শিকদারের সমর্থকরা টিকারি বাজারে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। ভাংচুর করা হয় বেশ কয়েকটি মটরসাইকেল। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বর প্রার্থী মাহমুদুল হক পলাশের মৃত্যু হয়। খবর ছড়িয়ে পড়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নৌকা প্রার্থীর সর্মকরা ওই বাড়িতে জোড় হলে নতুন করে সংঘর্ষের আশংকা তৈরী হয়। খবর পেয়ে নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই তহিদুজ্জামান পুলিশ নিয়ে সেখানে ছুটে আসেন। এসআই তহিদুজ্জামান তখন উপস্থিতিদের জানান পলাশের মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে। এতে সেখানে উপস্থিত নৌকার সর্মথকরা উত্তেজিত হয়ে এসআইকে ধাওয়া করে। টিকারি বাজারে শুরু হয় পুলিশ ও নৌকা সর্মথকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এ সময় গুরুতর ভাবে আহত হন এসআই তহিদুজ্জামান। পরস্থিতি সামাল দিতে জেলা শহর থেকে সদর থানার ওসি শেখ সোহেল রানার নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। এই ঘটনার মধ্যে নৌকার প্রার্থী মোঃ শহিদুল ইসলাম সিকদারের ভাই ইমদাদুল হক সিকদারের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। সতন্ত্র প্রার্থী আনারস মার্কার প্রার্থী মোঃ আবু সাঈদ শিকদারের বাড়িতেও নৌকার সর্মথকরা পাল্টা হামলা চালায় বলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ। দুই প্রার্থী একই গোষ্ঠির এবং সম্পর্কে তারা মামা ভাগ্নে। তাদের বাড়িও পাশাপাশি। এদিকে মৃত মেম্বর প্রার্থী মাহমুদুল হক পলাশের স্ত্রী শিউলি খাতুন বলেন, তার স্বামীকে কেও হত্যা করেনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে তিনি মারা যান। মেম্বর প্রার্থীর ভাই শিমুলও বলেছেন একই কথা। ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার বলেন, পরিবারের লোকজন পলাশের মৃত্যু নিয়ে কোন অভিযোগ করেনি। হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজন জানিয়েছে তাকে। পরিস্থিতি আরো জটিল হওয়ার আশংকায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।