ঝিনাইদহে এ বছর পাটের সোনালি আঁশ ঘরে তোলা নিয়ে চিন্তিত কৃষক। পুকুর, জলাশয়, খাল-বিল আর জিকে সেচ খালে পানি না থাকায় পাট জাগ দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। বাড়তি টাকা খরচ করে পুকুর বা জলাশয়ে সেচ দিয়ে অনেকে পাট পচাচ্ছেন। এতে বাড়ছে উৎপাদন খরচ। আর আগামী সপ্তাহে পানি দেয়া যাবে বলে আশাবাদী পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সরেজমিন দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ পাটের আবাদ করা হয়েছে। ফলনও বেশ ভালো। কিন্তু পানি না থাকায় কৃষকরা পাট জাগ দিতে পারছেন না। তাই জমি থেকে পাট কাটছেন না তারা।
শৈলকুপা উপজেলার গাবলা গ্রামের কৃষক মঞ্জুর আলী বলেন, ‘গত বছর পানির কারণে পাট নিয়ে খুব ঝামেলায় ছিলাম। একটা পুকুরে জাগ দিয়ে পানি দিতে দিতে অনেক খরচ হয়ে যায়, তাই এবার আর পাট আবাদ করিনি।
মির্জাপুর গ্রামের কৃষক রুহুল শেখ বলেন, ‘আমাদের মাঠে এবার প্রচুর পাটের আবাদ হয়েছে। কিন্তু পাট জাগ দেয়ার কোনো জায়গা নেই। পুকুরে পানি নেই। ক্যানেলে পানি দিত, কিন্তু এখন ক্যানেলেও পানি দেয়নি। কী করে মাঠ থেকে পাট কাটব। তাই বৃষ্টির আশায় বসে আছে।
উপজেলার গাড়াগঞ্জ এলাকার কৃষক রাশেদ আলী বলেন, জিকে ক্যানেলে পানি দিয়ে এই এলাকার হাজার হাজার কৃষক পাট পচাতে পারত। পানি থাকলে পাটের রংও ভালো হয়। তাতে দামও ভালো পাওয়া যায়। এ বছর যে বৃষ্টি হয়েছে তাতে পুকুর, জলাশয় কোথাও পানি হয়নি। এখন কৃষক পাট জাগ দেবে এমন পানিও পাচ্ছে না। যদি পানি উন্নয়ন বোর্ড ক্যানেলে পানি দিত, তাহলে এলাকার কৃষকদের খুবই উপহার হতো।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, এ বছর জেলার ৬ উপজেলায় ২২ হাজার ৫২৪ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ফলনও হয়েছে ভালো।
পানি সংকট নিয়ে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপপ্রধান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালেব বলেন, জিকে সেচ খালের মেইন ক্যানেল, যেটা কুষ্টিয়া হয়ে মাগুরার দিকে গেছে, সেই খালে পানি দেয়া আছে। আলমডাঙ্গা খালসহ অন্যান্য খালে পানি সরবরাহের কাজ চলছে। এ সপ্তাহের মধ্যে আশা করি পানি দিতে পারব। পানি দেয়া হলে কৃষকের সমস্যা কিছু হলেও সমাধান হবে।