দুরন্ত প্রকাশ ডেস্ক: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিগত শেখ হাসিনার সরকারের আমল থেকে দায়িত্বপ্রাপ্তদের পদত্যাগের জন্য ‘বল প্রয়োগ করা যাবে না’ বলে জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
পদত্যাগে বাধ্য করে অস্থিরতা সৃষ্টি করলে ‘প্রশাসন ভেঙে পড়তে পারে’ বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
২৫ আগস্ট রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে এ কথা বলেন শিক্ষা উপদেষ্টা। মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদে যারা দায়িত্ব পালন করছেন তাদের কারও বিরুদ্ধে ন্যায়সঙ্গত অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কাঠামো ঠিক রাখার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ”নতুন করে পদায়ন ও নিয়োগের কার্যক্রম চলছে। জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করে অস্থিরতা সৃষ্টি করলে প্রশাসন ভেঙে পড়তে পারে। শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা পেতে অসুবিধা হবে।” সরকার পতনের পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পদ ছেড়েছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গত সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া প্রশাসনিক পদে দায়িত্বপ্রাপ্তরা
বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জোর করে পদত্যাগের বিষয়টি তীব্র সমালোচনা তৈরি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার এক সপ্তাহ পরও উপাচার্যসহ অন্য কর্মকর্তাদের পদত্যাগের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এক প্রকার স্থবির হয়ে আছে। এখনো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পদত্যাগের দাবি চলছে পদত্যাগে বাধ্য করা নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ম বিধি অনুযায়ী পদায়ন ও বদল করা হয়। তাদের বলপূর্বক পদত্যাগের সুযোগ নেই।”
‘একটি সফল অভ্যুত্থানের পর’ সুশৃঙ্খল সমাজের প্রত্যাশায় ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদে প্রত্যাশিত সম্পর্ক ফিরিয়ে আনাতে তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “কাউকে ব্যক্তিগতভাবে অপমানিত করা যাবে না। শিক্ষাঙ্গনে ভদ্রতা বজায় রাখতে হবে।”
৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পরদিন আবাসিক হলসহ ক্যাম্পাস খুললেও এখনও স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমে ফেরেনি। এর মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ১৮ অগাস্ট রোববার থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ দেন।
এর আগে সার্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমের বিরোধিতায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের কর্মবিরতির কারণে ১ জুলাই থেকে বন্ধ ছিল ক্যাম্পাসগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একদিকে প্রশাসনহীন, অন্যদিকে কোথাও কোথাও প্রশাসনিক পদে থাকা ব্যক্তি ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। দেড় মাসের বেশি সময় শিক্ষা কার্যক্রম না চলায় দীর্ঘ সেশনজটের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।