1. admin@durantoprokash.com : admin :
শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
নরসিংদীর ঘোড়াশালে পারবত ট্রেনের ধাক্কায় অজ্ঞাত এক নারীর মৃত্যু কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত গাজীপুরের টেলিভিশন সাংবাদিক ক্লাবের উদ্যোগে সাংবাদিকদের উপর হামলার প্রতিবাদে মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও আড়াই হাজারের দুই কারখানায় অগ্নিকান্ড ভূমিস্বত্ব হয়েছে ২৪ নং চৌড়া নয়াবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত ৫০০ নবজাতককে হত্যা করে খেয়েছিলেন এই মানুষখেকো শৈলকুপায় একা মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা সভাপতি ও ক্যাশিয়ারের বিরুদ্ধে বেতন ভাতা আটকে রাখার অভিযোগ সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁর মুক্তির দাবিতে ঝিনাইদহে মানববন্ধন আর্জেন্টিনাকে উড়িয়ে টানা দ্বিতীয় জয় ব্রাজিলের

স্থানীয় সিন্ডিকেট আর জেলা প্রশাসনের টাকা আয়ের উৎস্য যেন মেলার মাঠ

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর, ২০২২
  • ৮৪ Time View

হতদরিদ্র বাদাম বিক্রেতা মনিরুল ইসলামকে (ছদ্মনাম) দিন শেষে গুনতে হয় ২ শত টাকা। একই ভাবে পাপর বিক্রি করেন আনিচুর রহমান (ছদ্মনাম) তাকেও দিতে হয় ৩ শত টাকা। এভাবে ছোট ছোট দোকান গুলোকে প্রতিদিন রাত হলেই মোটা অংকের টাকা গুনতে হচ্ছে। বড় দোকান গুলোকে গুনতে হচ্ছে ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। প্রতিদিন মেলা কমিটির পক্ষ থেকে এই টাকা আদায় করছে।

মেলার সঙ্গে যুক্ত একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, এ জাতীয় ক্ষুদ্র দোকান সহ ছোট বড় ১ শত থেকে ১১০ টি দোকান বসছে প্রতিদিন। আর কাঠের ফার্নিসার বিক্রির দোকান বসানো হয়েছে প্রায় ৩৫ টি। এ সব দোকান গুলো থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে লক্ষাধিক টাকা আয় করছে একটি গ্রুপ। অথচ মেলার স্থান কত টাকায় বিক্রি হয়েছে তার কোনো সঠিক তথ্য দিচ্ছে না প্রশাসন। তারা শুভঙ্গরের ফাঁকি ঠেকাতে তথ্য গোপন করা হচ্ছে। একটি সুত্র অভিযোগ করেছে, মেলার নামে মাঠ বরাদ্ধ দিয়ে মোটা টাকা ভাগাভাগি করেছে প্রশাসন আর স্থানীয় একটি চক্র। যার খেশারত দিচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এমন কি বড়ব্যবসায়ীদেরও এবার লোকসান গুনতে হবে। তারা প্রতিদিনের টাকা গুনে লাভের মুখ চোখে দেখছেন না বলে জানিয়েছেন।

ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ড মাঠে গত কয়েক বছর হিন্দুধর্মালম্বিদের দূর্গা পুজাকে ঘিরে ফার্নিসার মেলা বসছে। এই মেলাটি ইতি পূর্বে পুরাতন জেল খানা এলাকায় বসানো হতো। এই মেলার মাঠটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বরাদ্ধ দেওয়া হয়। এরজন্য মাঠ বিক্রি করেন তারা। এক মাসের জন্য মাঠ বিক্রি করার পর ক্রেতা মেলা স্থানে দোকান বসিয়ে ভাড়া দেন। প্রতিবছর এই ছোট দোকান গুলো মাসে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা দিয়ে দোকান পরিচালনা করেছেন। এ বছর দিনে সেই পরিমান টাকা দিতে হচ্ছে। একই ভাবে বড় দোকান গুলো থেকেও গত বারের তুলনায় কয়েক গুন টাকা দিতে হচ্ছে। এটা তাদের উপর এক ধরনের জুলুম বলে দাবি করেন।

দেখা যায় মেলার প্রবেশ পথেই রয়েছে বাহারি রকমের খাবার, একটু পাশে রয়েছে কসমেটিস আর শীতের পোশাকসহ বিভিন্ন সামগ্রীর। মেলার অন্য পাশে অল্পসংখ্যক ফার্নিচারের দোকান। এদিকে বাড়তি টাকায় খাবারের দোকান বসানোর জন্য ব্যবসায়ীরা একটু লাভের আশায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি ও বিক্রি করছেন। এমনকি বাসি খাবারও গরম করে বিক্রি করা হচ্ছে। কিছু খাবারের দোকানে দেখা গেছে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন খাবারের গায়ে ইচ্ছেমতো খাবারের মেয়াদ উত্তীর্ণ ও দাম নির্ধারণ করেছে।

মেলায় আসা সাব্বির রহমান জানান, পরিবার নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছি এখানে এসে দেখি ফার্নিচারের চেয়ে কসমেটিস ও খাবারের দোকান বেশি। তিনি অভিযোগ করে জানান, মেলায় যে খাবার বিক্রি হচ্ছে সেগুলো খুবই নি¤œমানের। এমনকি দামও বাইরের খাবারের চেয়ে অনেক বেশি। প্রশাসনের উচিত এদিকে একটু নজর দেওয়া। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেলায় বাদাম বিক্রেতা বলেন, এখানে বাদাম বিক্রি করতে হলে প্রতিদিন মেলা কমিটিকে তাকে দুইশ টাকা দিতে হয়। প্রতিদিন সকালে তাদের টাকা না দিতে পারলে সেদিন আর মেলায় বাদাম বিক্রি করতে দেন না। হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করা এক যুবক বলেন, মেলায় মিঠাই বিক্রি করতে হলে প্রতিদিন ২৫০ টাকা করে দিতে হয়। তারপর বিক্রি করতে দেয়। একদিন টাকা দিতে না পারলে মেলা থেকে ঘাড়ধরে বের করে দেন মেলা কমিটি।

মেলার মাঠের চিংড়ির দোকানের এক কর্মচারি বলেন, এবার মাঠে তাদের তিনটি দোকান আছে এর মধ্যে দুইটি চিংড়ি ও একটি ফুচকা চটপটির দোকান। আর এই দোকান গুলো নিতে প্রায় চার লক্ষ টাকা দিতে হচ্ছে। মেলার মাঠে এক নারী বলেন, আমাদরে বিভিন্ন ধরনের আচার ও শরবতের দোকান আছে। এর জন্য প্রতি দিন ৮শ’ টাকা দিতে হয়। আমাদের পাশে যে জিলাপির দোকানটা আছে তার কাছ থেকে নিয়েছে ৬০ হাজার টাকা। অথচ এর আগে তার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে নিত এক মাসের জন্য। তিনি আরো জানান ডিসি অফিস থেকে এক মাসের জন্য মেলার অনুমতি নেয় স্থানীয় একজন। এরপর আজগার আলী নামের বাইরের এক পাটির কাছে মেলার একটি সাইড বিক্রি করে দেয় মোটা টাকায়। তারা আবার দশ বাই দশ ফুট জায়গা বিক্রি করছেন এক একটি দোকানের কাছে ৪০ হাজার টাকা করে। এছাড়াও ক্ষুদ্র যে ব্যবসায়ীগুলো আছে প্রতি দিন তাদের কাছ থেকেও নেয়া হয় মোটা অংকের টাকা।

এ বিষয়ে আজগার আলী জানান, সম্পূর্ণ মেলারমাঠটি রোকন ভাইয়ের। তার কাছ থেকে মেলার মাঠের এক সাইড বিনোদনের জন্য ১০ লক্ষ টাকায় কিনে নিয়েছি। আমার সঙ্গে চাঁন মিয়া নামের আরেকজন আছেন। এছাড়াও আমাদের সাথে আরো ৪-৫ জন সহযোগী আছে। এই বিনোদনের সাইট টা সম্পূর্ণই আমাদের। তিনি আরো জানান রোকন কিভাবে মেলা নিয়েছে এবং কত টাকায় মেলা নিয়েছে এটা আমরা কিছুই বলতে পারবনা। এই সাইডে আমরাই দেখা শোনা করি। রোকনের শুধু ফার্নিচার এর দোকানগুলোর দায়িত্ব আছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেও রোকনুজ্জামানকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে জেলা জেলা প্রশাসকের দপ্তরের নাজির মো. জাহিদ হাসান জানান, আপনাদের মেলার তথ্য দেওয়া যাবে না। আপনি এই তথ্য নিয়ে কি করবেন। আপনি লিখতে পারেন, এখানে মেলা চলছে। কিন্তু মেলার তথ্য চাইতে পারেন না। কত টাকায় মাঠ বরাদ্ধ হয়েছে তা দেওয়া যাবে না বলে জানান।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সেলিম রেজা মোবাইলে বলেন, ফার্নিচার মেলা এক মাসের জন্য অনুমতি দেয়া হছে। তবে এক মাস মেলার জন্য কত টাকায় অনুমতি দেয়া হয়েছে এটা সঠিক জানা নেই। মেলায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতিদিন কত টাকা নেয় মেলা কর্তিপক্ষ এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়েছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© দুরন্ত প্রকাশ কর্তৃক সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত ২০২০ ©
Theme Customized BY WooHostBD